ইলন মাস্ক সম্পর্কে কিছু বিস্ময়কর তথ্য

tech news ইলন মাস্কের
Latest News Update 24

আধুনিক প্রযুক্তি ও অতিকায় করপোরেট জগতে আপনি ইলন মাস্কের মতো একজন প্রশংসনীয় ব্যক্তির খোঁজ সচরাচর পাবেন না। টেসলা ও স্পেসএক্সের বদৌলতে বিশ্বব্যাপী তিনি অর্জন করেছেন যথেষ্ট পরিচিতি। আপনি জেনে অবাক হবেন যে টেসলা ও স্পেসএক্সের বাইরেও মাস্কের আরও কিছু চকমপ্রদ উদ্যোগ রয়েছে। ব্যবসায়ী হিসেবে অসাধারণ সাফল্য ছাড়াও ইলন মাস্ক বর্তমান সময়ে তরুণ প্রজন্মের কাছে এক আইকনে পরিণত হয়েছেন।
এ লেখায় আমরা তুলে ধরব আধুনিক প্রযুক্তি বিশ্বের রাজপুত্র ইলন মাস্ক সম্পর্কে কিছু কৌতূহলোদ্দীপক তথ্য।
১. ইলন মাস্ক যদিও খ্যাতি অর্জন করেছেন টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে, কিন্তু সেই সাথে তিনি অর্থ আদান-প্রদানের জনপ্রিয় মাধ্যম পেপ্যালেরও সহ-প্রতিষ্ঠাতা।
২. খুব অল্প সংখ্যক মানুষই হয়তো জানেন যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠানো হয়েছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএক্স কোম্পানির মাধ্যমে।
৩. টনি স্টার্ক হয়তো রুপালি পর্দার ‘আয়রন ম্যান’, কিন্তু বাস্তব জীবনে এ খেতাবের আসল মালিক ইলন মাস্ক। আপনারা জেনে পুলকিত হবেন যে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএক্স কোম্পানিতে ‘আয়রন ম্যান ২’ চলচ্চিত্রের চিত্র ধারণ করা হয়েছিল। মজার ব্যাপার হলো, চলচ্চিত্রটিতে ইলন মাস্ককে অল্প সময়ের জন্য অতিথি চরিত্রেও দেখা গিয়েছিল।
৪. এটা বেশ অবিশ্বাস্য যে এ ধনী ব্যক্তি তার নিজের কোম্পানিতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পদে কাজের জন্য বার্ষিক পারিশ্রমিক গ্রহণ করেন মাত্র ১ ডলার। তাহলে কীভাবে তিনি অবিশ্বাস্য ধনী হলেন? ইলন মাস্ক তার মালিকানাধীন অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান থেকে লভ্যাংশ পান। পাশাপাশি মাস্ক মূলত টেসলা থেকে কিছু অতিরিক্ত সুবিধা নেন। আসলে ১ ডলার পারিশ্রমিক নেয়া সিলিকন ভ্যালির এক সুপরিচিত ঐতিহ্য, সেখানে প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইওরা সরাসরি বেতন নেয়ার পরিবর্তে লভ্যাংশ ও অন্যান্য খাত থেকে আর্থিক সুবিধা নেন। এমনকি স্টিভ জবস ও মার্ক জাকারবার্গও একই উদাহরণ রেখেছেন।
Tech news for Elion Mask
Add caption
৫. ইলন মাস্ক মাত্র ১২ বছর বয়সে প্রোগ্রামিং শেখেন এবং নিজের জ্ঞান ব্যবহার করে একটি ভিডিও গেম বানান। তারচেয়েও অবাক করা ব্যাপার হলো তিনি গেমটি ৫০০ ডলারে বিক্রিও করে দেন।
৬. মাস্ক তার মাতৃভূমি দক্ষিণ আফ্রিকা ছেড়ে ১৭ বছর বয়সে কানাডায় আসেন। পরে তিনি ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়াতে ভর্তি হন। 
৭. বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকা, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব রয়েছে ইলন মাস্কের।
৮. স্নাতক হওয়ার পর ইলন মাস্ক বিখ্যাত স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধীনে স্নাতকোত্তরে পড়াশোনা শুরু করেন। তবে, বিনিয়োগকারী হওয়ার অদম্য বাসনার কারণে তিনি কেবল দুই দিন ক্লাস করার পরই কোর্স ছেড়ে দেন।
৯. তিনি ১৯৯৯ সালে তার প্রথম কোম্পানি জিপিটু বিক্রি করেন ৩০ কোটি ৭০ লাখ ডলারে।
১০. ইলন মাস্ক বর্তমানে তার বৈদ্যুতিক গাড়ির কোম্পানি ‘টেসলা’য় সিইও এবং চিফ প্রোডাক্ট আর্কিটেক্ট হিসেবে দ্বৈত ভূমিকা পালন করছেন।
১১. টেসলার যুগান্তকারী উদ্ভাবন ‘টেসলা’ মডেলের গাড়ি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হাইওয়ে ট্রাফিক সেফটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনএইচটিএসএ) কর্তৃক ৫.০ স্কেলে ৫.৪ পয়েন্ট পেয়ে সর্ব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
১২. ইলন মাস্ক প্রতিষ্ঠিত স্পেসএক্স কোম্পানির বদৌলতে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গমন খরচ ৯০ শতাংশ কমে এসেছে।
১৩. নিজস্ব সম্পদ ব্যবহার করে কল্পনাকে বাস্তব করতে তার অন্তহীন উত্সাহের জন্য মানুষজন মাস্ককে মজা করে ‘ট্রিলিয়নিয়ার’ বলে থাকে।
ইলন মাস্ক
১৪. মাস্কের স্বজনরা সৌর শক্তি নিয়ে গবেষণার প্রতিষ্ঠান সোলারসিটি প্রতিষ্ঠা করলেও তিনিই এ উদ্যোগের পেছনে মূল বিনিয়োগকারী।
১৫. ইলন মাস্কের হাইপারলুপ প্রকল্পের লক্ষ্য হলো প্রায় বায়ুশূন্য টিউবের মধ্য দিয়ে উচ্চগতির ক্যাপসুল চলাচল উদ্ভাবন, যা মানুষের ভ্রমণের গতিকে আরও বাড়িয়ে দেবে।
১৬. হাইপারলুপ প্রকল্পের জন্য ভূগর্ভস্থ পথ নির্মাণের লক্ষ্যে মাস্ক ‘দ্য বোরিং কোম্পানি (টিবিসি)’ নামে আরেকটি কোম্পানি গঠন করেছেন।
১৭. ইলন মাস্ক প্রতিষ্ঠিত ২০১৬ সালের একটি কোম্পানি হলো নিউরোলোস্কি। বর্তমানে এ কোম্পানি মস্তিষ্কের সাথে যন্ত্রের একটি সংযোগ উদ্ভাবন করেছে, যা মানুষের মস্তিষ্ককে কম্পিউটার ও মোবাইল প্রযুক্তির সাথে যুক্ত করবে। 
১৮. ইলন মাস্কের কোম্পানি টেসলা ইনকরপোরেশন সম্প্রতি নিয়ে এসেছে সাইবারট্রাক। বৈদ্যুতিক ব্যাটারিচালিত এ যানটি জীবাশ্ম জ্বালানিতে চলা ট্রাকের এক সবুজ বিকল্প। এর তিনটি মডেলের পাল্লা ৪০০ থেকে ৮০০ কিলোমিটারের মধ্যে এবং ২.৯ থেকে সাড়ে ৬ সেকেন্ডের মধ্যে এগুলোর ঘণ্টা প্রতি গতি গিয়ে পৌঁছায় ০ থেকে ৬০ কিলোমিটারে।
সার্বিকভাবে ইলন মাস্ক একজন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, কঠোর পরিশ্রমী ও মেধাবী ব্যক্তি, যার দূরদর্শী ভাবনা এ পৃথিবীকে বসবাসের জন্য আরও ভালো জায়গা করে তুলবে।

Comments

Popular posts from this blog

বড় ধরনের ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল বগুড়ার ‘হঠাৎ মার্কেট’

পশ্চিম অঞ্চল রেলওয়ের উন্নয়নের নামে ৪০০ কোটি টাকা লোপাট!

চুরি করতে এসে ঘুমিয়ে গেল চোর!